Advertisement |
আঙুলের চোটে সংযুক্ত এশিয়া কাপের মাঝপথে দেশে ফেরেন সাকিব আল হাসান। অস্ত্রোপচারের জন্য দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু হাতের ব্যথার তীব্রতায় সাকিবকে পরের দিন নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানে সাকিবের হাতে ছোট একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। তার হাত থেকে দুই দফায় পুঁজ বের করা হয়েছে।
অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে হলেও চোটগ্রস্ত হাতের অবস্থা বুঝতে ৫ অক্টোবর, শুক্রবার সাকিব পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. গ্রেগ হয়ের পরামর্শ নেবেন তিনি। তবে দেশ ছাড়ার আগে বিষাদমাখা এক খবর দিয়ে গেলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক (র.) বিমানবন্দরে সাকিব জানান, আর কখনোই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে না তার আঙুল।
এ নিয়ে সাকিবের ভাষ্য, ‘ইনজুরির দিক থেকে এটাই তো আসলে সবথেকে বড়। এর আগে যে সার্জারিটা হয়েছিল ওটা খুব বেশি দিনের না, ওটা প্রথমেই যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট হতো তাহলে অনেক কম সময়ে হয়ে যেত। তবে ওটা আসলে অত বেশি চিন্তার ছিল না। তবে এটা আমার কাছে মনে হয় অত বেশি। একটা জিনিস যে, হাতটা পুরোপুরি তো আর ওইভাবে ঠিক হবে না, কিন্তু ক্রিকেট খেলার মতো ঠিক করতে হবে আঙুলটা।’
চোটগ্রস্ত আঙুলটি পুরোপুরি ঠিক না হলেও খেলার জন্য উপযোগী করে তুলতেই মেলবোর্ন যাত্রা সাকিবের। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘ওই আঙুলটা আর কখনো শতভাগ ঠিক হবে না। কারণ, এটা হচ্ছে হাড্ডিটা যেটা নরম হাড্ডি। এটা আর কখনো জোড়া লাগার সম্ভাবনা নাই। তবে সার্জারিটা হবে এমন যে, ওরা এমন একটা সিচুয়েশনে এনে দিবে, যেন আমি ব্যাট-ট্যাড ভালোভাবে ধরতে পারব, ক্রিকেট খেলাটা চালাতে পারব।’
আপাতত চিকিৎসককে দেখিয়ে পাঁচ দিন পর ফিরে আসবেন। ইনফেকশন শূন্যতে নেমে এলেই হবে অস্ত্রোপচার। তখন আবারও উড়াল দিতে হবে। এ নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আসলে ইনফেকশন আমার সবথেকে বড় টেনশনের জায়গাটা। কারণ, ওটা যতক্ষণ পর্যন্ত না জিরো পার্সেন্টে আসবে, কোনো সার্জন হাত দিবে না। কারণ ওখানে হাত দিলে পরে বোনে চলে যাবে আর হাড়ে চলে গেলে পুরো হাত নষ্ট। এখন আমার মেইন পয়েন্ট হচ্ছে কীভাবে ইনফেকশনটা সারানো যায়। অস্ট্রেলিয়ায় আমি ইনফেকশনের ট্রিটমেন্টের জন্যই যাচ্ছি, আর কোনো ট্রিটমেন্টের জন্য যাচ্ছি না।’
চিকিৎসকদের মতে, কমপক্ষে তিন মাসের জন্য মাঠের বাইরে থাকবেন সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা হতে পারে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে। তবে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরের শুরু থেকেই খেলার ব্যাপারে আশাবাদী সাকিব।
ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়কের ভাষ্য, ‘এখন অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি, ওরা যদি বেটার কোনো ট্রিটমেন্ট দিতে পারে তাহলে আরো তাড়াতাড়ি হয়তো সারার সম্ভাবনা থাকবে। এখন মূল যেটা হয়েছে, ইনফেকশনটা তো দূর করতে হবে। ওটা চলে গেলেই আসলে বুঝা যাবে কত সময় লাগবে। আর মেইন সার্জারি যেটা করার কথা, ওটা হলে ছয় থেকে আট সপ্তাহ। সাধারণত ছয় সপ্তাহ লাগে। দুই সপ্তাহ বেশি ধরা হয়। যদি ছয় সপ্তাহ হয় তাহলে বিপিএলের বেশ আগেই ফিট হয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’
এ বছরটা আর মাঠে নামা হচ্ছে না সাকিবের। যা বড় প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশ দলে। তবে এটা মানতে নারাজ সাকিব। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের মতে, শুধু সাকিব-তামিম কেন, আরও কয়েকজন না খেললেও কোনো সমস্যা হবে না। জুনিয়রদের ওপর শতভাগ আস্থাই রাখছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই ‘পোস্টার বয়’।
প্রিয় খেলা/আজাদ চৌধুরী
0 comments: